ঢাকা, ২৬ জানুয়ারি রোববার, ২০২৫ || ১৩ মাঘ ১৪৩১
good-food
৪৭

সাইফের হামলার সিসিটিভি ফুটেজের ব্যক্তি ভিন্ন: শরিফুলের বাবা

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২৩:৩৩ ২৪ জানুয়ারি ২০২৫  

ভারতের মুম্বাইতে বলিউড তারকা সাইফ আলি খানের বাড়িতে ঢুকে হামলা চালানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার হন শরিফুল ইসলাম শেহজাদ। তার বাবা জানান, গ্রেপ্তার ব্যক্তি তার ছেলে। কিন্তু সিসিটিভি ফুটেজে যাকে দেখা যাচ্ছে সে ছেলে নয়। অর্থাৎ ফুটেজের ব্যক্তি ও গ্রেপ্তার হওয়া ভিন্ন ব্যক্তি বলে দাবি করছেন তিনি।

 

ঝালকাঠিতে তিন ছেলে ও ও স্ত্রীকে নিয়ে রুহুল আমিন ফকিরের পরিবার। শরিফুল ইসলাম তার দ্বিতীয় সন্তান। সবশেষ গত শুক্রবার সন্ধ্যা নাগাদ ছেলের সঙ্গে শেষবার ফোনে কথা হয়েছিল বলে বলেন তিনি। সেসময় পরস্পর কুশল বিনিময় হয় জানিয়ে রুহুল আমিন ফকির বলেন, আমি বেশি কথা বলি না...। ছেলেপেলে যখন কথা বলে কেমন আছো, কী? ভালো থাকো, এই সমস্ত কথা।

 

টিভি চ্যানেল ও ফেসবুকের মাধ্যমে ছেলের ভারতে গ্রেপ্তারের খবর জানতে পারেন বলেও দাবি করেন রুহুল। তিনি বলেন, ফুটেজে যে ছবি দেখলাম, তারপরে মনে হইলো একই ধরনের না। আমার ছেলেকে অ্যারেস্ট করসে। আর ছবিতে ওই ছেলে একই না, একটু তফাৎ।

 

নিজের ৩০ বছর বয়সী ছেলে সম্পর্কে বিবরণ দেন রুহুল। তিনি বলেন,সে ছোটবেলা থেকেই চুল ছোট রাখে এবং ব্যাকব্রাশ করে। মানে চুলটা একটু উপরের দিকে থাকে। আর ওই ফুটেজের যে ছবি সে চোখের ভ্রু পর্যন্ত চুল নামানো। এরপর দেখলাম চেহারা ছবিতে মেলে না।

 

অন্য কারও সঙ্গে মিলিয়ে ফেলে তার সন্তানের ওপর অভিযোগ আনা হয়েছে দাবি করছেন তিনি। একই সঙ্গে মাত্র ছয় সাত মাস আগে ভারতে গিয়ে এই ধরনের কঠিন কাজ করা গ্রামের কোনো ছেলের পক্ষেই সম্ভব না বলে মনে করেন রুহুল। বলেন, সে কোন মাপের লোক সাইফ আলী খান, শাহরুখ খান, সালমান খান! এরা কি প্রভাবশালী মন্ত্রী- এমপিদের মতো। এরা সুপারস্টার। এদের কাছে যাওয়া তো কঠিন, এমন বিস্ময়ও প্রকাশ করেন তিনি।

 

কেন ভারতে গিয়েছিলেন শরিফুল?

রুহুল জানান, ২০২৪ সালের মার্চ-এপ্রিল নাগাদ ভারতে যান শরিফুল ইসলাম। তার বিরুদ্ধে বেশ কিছু মামলা ছিল। আমাদের এলাকায় আমি ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি এবং আমার এ ছেলেও সদস্য। বড় ছেলেও রাজনীতি করে। তিনি জানান, আওয়ামী লীগ আমল থেকেই তাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা দেয়া হয়েছিল। এসব কারণেই তার ছেলে দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

 

রুহুলের দেয়া তথ্যমতে, শরিফুল ভারতে যে যাচ্ছেন সেটা পরিবার জানতো। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর তিনি ফিরতে চেয়েছিলেন কিনা জানতে চাইলে 'না' বলে উল্লেখ করেন রুহুল। তিনি বলেন, ওখানেই কাগজপত্র করাইয়া থাকবে, এই ছিল কথা। ভারতে শরিফুল একটি 'বার ধরনের হোটেলে' কাজ নিয়েছিলেন এবং প্রতি মাসের ১০ তারিখের পর বেতনের কিছু টাকা বিভিন্ন মাধ্যমে পরিবারের কাছে পাঠাতেন বলেও উল্লেখ করেন রুহুল।

 

হোটেলের কাজের কথা অবশ্য মুম্বাই পুলিশের ভাষ্য থেকেও জানা যায়। মুম্বাইতে একটি পাবে ওয়েটারের কাজ নেয়ার পর কাজ টেকেনি বলে জানানো হয় ভারতের পুলিশের দিক থেকে। গত ১৬ জানুয়ারি ভোর রাতের দিকে মুম্বাইয়ের বান্দ্রা এলাকায় সাইফ আলি খানের বাসভবনে ঢুকে তার ওপর হামলা চালায় এক আততায়ী। তার ছুরিকাঘাতে মারাত্মক আহত হন তিনি।

 

এরপর ১৯ জানুয়ারি ভোরে মুম্বাইয়ের কাছে একটি গভীর ম্যানগ্রোভ জঙ্গলের ভেতর থেকে শরিফুল ইসলাম শেহজাদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সাইফের ওপর হামলার অভিযোগে গ্রেপ্তারের তথ্য জানানোর পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশি বলে উল্লেখ করা হয় মুম্বাই পুলিশের দিক থেকে। যদিও আদালতে পেশ করা হলে যে দু'জন আইনজীবী তার হয়ে প্রশ্ন করেছেন তারা দু'জনেই দাবি করেছেন ওই ব্যক্তি বাংলাদেশি নাগরিক এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

 

আইনজীবী সন্দীপ শেরখানে দাবি করেছেন, শরিফুল ইসলাম বিগত বহু বছর ধরে মুম্বাইতে নিজের পরিবারের সঙ্গেই বসবাস করছেন। ফলে মাত্র কয়েক মাস আগেই তিনি অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে ঢুকেছেন –এই বক্তব্য সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। শরিফুলের পরিচয়, পরিচয়পত্র, এমনকি ভারতে 'বাংলাদেশ-বিরোধী' রাজনীতি নিয়েও তর্ক বিতর্ক চলছে। অনেকেই পুলিশের এত তড়িঘড়ি করে 'বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী' হিসেবে বর্ণনা করাকে সন্দেহের চোখেও দেখেছেন।

বিনোদন বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর