ঢাকা, ১৩ ডিসেম্বর শুক্রবার, ২০২৪ || ২৮ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
২৫৯

সাউথ আফ্রিকাকে মাটিতে নামিয়ে নেদারল্যান্ডসের রূপকথার জয়

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ০১:২২ ১৮ অক্টোবর ২০২৩  

শ্রীলঙ্কা ও অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে রীতিমতো উড়ছিল সাউথ আফ্রিকা। প্রতিপক্ষ হিসেবে তুলনামূলক দূর্বল শক্তির হওয়ায় নেদারল্যান্ডসকে নিয়ে খুব বেশি চিন্তার ছিল না টেম্বা বাভুমার দলের। তবুও ম্যাচের আগে প্রোটিয়া অধিনায়ক জানিয়েছিলেন, ডাচদের তারা একেবারেই ছোট করে দেখতে চান না। সবশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে হওয়া ডাচ রূপকথা যে বাভুমা এখনও ভুলেননি সেটা স্পষ্টই ছিল। বাভুমা যে ভয় পেয়েছিলেন, সেটিই সত্যি হলো।

 

কুইন্টন ডি কক, রাসি ভ্যান ডার ডাসেন, এইডেন মার্করামদের সঙ্গে হেনরিখ ক্লাসেন ও ডেভিড মিলারকে নিয়ে গড়া ব্যাটিং লাইন আপ। অস্ট্রেলিয়া যেখানে পাত্তা পায়নি সেখানে নেদারল্যান্ডস তো দাঁড়াতেই পারার কথা নয়। অথচ ডাচদের সামনে ভড়কে গেল এবারের বিশ্বকাপের অন্যতম শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপ। ২৪৬ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে বিনা উইকেটে ৩৬ রান তোলা সাউথ আফ্রিকা ৪ উইকেট হারালো ৮ রানের ব্যবধানে।


 

৪৪ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর সেখান থেকে প্রোটিয়াদের টানতে পারতেন কেবল ক্লাসেন ও মিলার। তাদের দুজনের কেউই পারেননি ডাচ বোলারদের বেসামাল করে দিতে। বরং নিয়মিত বিরতিতে উইকেট দিয়ে বিশ্বকাপের প্রথম পরাজয় বরণ করতে হলো তাদের। ২০৭ রানে অল আউট হওয়ায় ৩৮ রানে হারতে হয় তাদের। ধর্মশালায় উড়তে থাকা সাউথ আফ্রিকাকে রীতিমতো মাটিতে নামিয়ে রূপকথা লিখলো ১২ বছর পর বিশ্বকাপে ফেরা নেদারল্যান্ডস।


জয়ের জন্য ২৪৬ রান তাড়া করতে নেমে ভালো শুরু করেছিলেন ডি কক ও বাভুমা। তাদের দুজনের ৩৬ রানের জুটি ভাঙেন কলিন অ্যাকারম্যান। ডানহাতি এই স্পিনারের বলে সুইপ করতে গিয়ে উইকেটকিপার স্কট এডওয়ার্ডসের গ্লাভসে ক্যাচ দেন ২০ রান করা ডি কক। খানিক বাদে রুওলফ ভ্যান ডার মারওয়েকে বড় শট খেলতে গিয়ে বলের লাইন মিস করে বোল্ড হয়েছেন বাভুমা। প্রোটিয়া অধিনায়কের ব্যাট থেকে এসেছে ১৬ রান।

 

মার্করাম সাজঘরের পথে হেঁটেছেন পল ভ্যান ম্যাকেরিনের বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ে। ডানহাতি এই পেসারের নিচু হওয়া শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে এজ হয়ে বোল্ড হন ১ রান করা এই ব্যাটার। ভ্যান ডার ডাসেন অসময়ে মারওয়েকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে প্যাভিলিয়নের পথে হেঁটেছেন। ফলে মাত্র ৪৪ রানে ৪ উইকেট হারায় সাউথ আফ্রিকা। এমন বিপর্যয় থেকে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেছিলেন ক্লাসেন ও মিলার। তারা দুজনে মিলে বেশ ভালোভাবেই এগোচ্ছিলেন।

 

ক্লাসেন বিধ্বংসী হয়ে উঠার আগেই সাজঘরে পাঠিয়েছেন লগান ভ্যান বিক। ডাচ পেসারের শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে লেগ সাইডে খেলতে গিয়ে বিক্রমজিত সিংকে ক্যাচ দিয়েছেন। ক্লাসেন ফিরে যান ২৮ রানের ইনিংস খেলে। মিলারকে সঙ্গ দিতে আসা মার্কো জেনসেনের ব্যাট থেকে এসেছে ৯ রান। দেখেশুনে ব্যাটিং করা মিলার ছিলেন হাফ সেঞ্চুরির পথে। তবে তাকে বিদায় করে ডাচদের বিপদ মুক্ত করেছেন ভ্যান বিক।

 

ডানহাতি এই পেসারের বলে স্লোয়ার ডেলিভারিতে বোকা বনে গিয়ে বোল্ড হয়েছেন ৪৩ রানের ইনিংস খেলা মিলার। এরপর জেরাল্ড কোয়েতজের ২২ এবং কেশভ মহারাজের ৪০ রান কেবল প্রোটিয়াদের হারের ব্যবধানই কমিয়েছে। নেদারল্যান্ডসের হয়ে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন, ভ্যান ম্যাকেরিন, ভ্যান ডার মারওয়ে এবং বাস ডি লিড। তিনটি উইকেট নিয়েছেন ভ্যান বিক। 

 

৪৩ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৪৫ রান করেছে তারা। এর মধ্যে শেষের ৯ ওভারেই নেদারল্যান্ডস তুলেছে ১০৪ রান। যদিও দলীয় ৫০ রানের মধ্যেই চার উইকেট হারিয়ে শুরুর দিকে ধুঁকছিল ডাচরা। ২ রান করেই আউট হয়েছিলেন ওপেনার বিক্রমজিত সিং। আরেক ওপেনার ম্যাক্স ‘ও’ডাউডের ব্যাট থেকে আসে ১৮ রান।

 

বাস ডি লিডের ব্যাট থেকে আসে মাত্র ২ রান। কলিন অ্যাকারম্যান আউট হয়ে যান ১২ রান করে। দলীয় ৮২ রানে সাইব্র্যান্ড এঞ্জেল্ব্রেচ ফিরে গেলে দ্রুত অল আউট হয়ে যাওয়ার শঙ্কা জাগে নেদারল্যান্ডসের। সেখান থেকেই দলের হাল ধরেন এডওয়ার্টস।

 

তেজা নিদামানুরুর সঙ্গে ৩০, ভ্যান বিকের সঙ্গে ২৮, ভ্যান ডার মারউইয়ের সঙ্গে ৬৪ রানের জুটি গড়ে ডাচদের বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেন এডওয়ার্ডস। নবম উইকেটে আরিয়ান দত্তকে নিয়ে অবিচ্ছিন্ন ৪১ রানের জুটি গড়ে নেদারল্যান্ডসকে বড় পুঁজি এনে দেন এডওয়ার্ডস।

 

তিনি শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ৬৯ বলে ৭৮ রানের ইনিংস খেলে। তার ইনিংস জুড়ে একটি ছক্কা ও ১০টি চারের মার ছিল। আরিয়ান অপরাজিত ছিলেন ৯ বলে ২৩ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলে। সাউথ আফ্রিকার হয়ে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন লুঙ্গি এনিগিদি, মার্কো জানসেন ও কাগিসো রাবাদা। একটি করে উইকেট নেন জেরাল্ড কোয়েতজে ও কেশভ মহারাজ।

খেলাধুলা বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর