ঢাকা, ২৫ নভেম্বর সোমবার, ২০২৪ || ১১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৭৭১

সাবধান : বাজারের নোট - কয়েনে মলমূত্রের ব্যাকটেরিয়া

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৩:৫২ ১৯ আগস্ট ২০১৯  

যেসব জায়গায় টাকার প্রবাহ বেশি হয় বিশেষ করে বাজারে নোট বা কয়েনে মলমূত্রের ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গেছে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞানের ছাত্রী নিশাত তাসনিম প্রায় ছয় মাস ধরে গবেষণা করে এর প্রমাণ পেয়েছে। খুলনা শহরের বিভিন্ন পর্যায়ের দোকান ও বিভিন্ন পেশার মানুষের কাছ থেকে সংগ্রহ করা টাকা ও কয়েনে তিনি এমন ব্যাকটেরিয়া পেয়েছেন।


নিশাত তাসনিম বলেন, ‘ই-কোলাই জাতীয় ব্যাকটেরিয়া মানুষের মলে পাওয়া যায়। এ ব্যাকটেরিয়া টাকা ও কয়েনে পেয়েছি। ১ হাজার মাত্রা পর্যন্ত ব্যাকটেরিয়াকে সহনশীল হিসেবে গ্রহণযোগ্য মনে করা হলেও ১২টি উত্স থেকে নেওয়া কাগজের টাকা এবং কয়েনে অনেক বেশিমাত্রায় ব্যাকটেরিয়া পেয়েছি।’ নিশাত জানান, ‘সবচেয়ে বেশি পরিমাণ ই-কোলাই পেয়েছি মাছ, মাংস ও মুরগির দোকান থেকে সংগ্রহ করা টাকার নোট-কয়েনে। বিক্রেতারা যে হাতে মাছ, মাংস, মুরগি ধরছেন এবং পরিষ্কার করছেন সেই হাতেই টাকা ধরছেন। ক্রেতারাও নোট বা কয়েন বিনিময় করছেন। তবে পুরনো সব নোট ও কয়েনেই ক্ষতিকর মাত্রায় ই-কোলাই ও ফেকাল কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়ার অস্তিত্ব পেয়েছি আমরা।’

নিশাত তাসনিমের এই গবেষণার তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ হারুণ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘মানুষের মলমূত্র থেকে আসা ব্যাকটেরিয়া মানবদেহের জন্য ভয়াবহ ক্ষতিকারক। কিছু ব্যাকটেরিয়া এমনিতেই হয়। আবার কিছু ব্যাকটেরিয়া মলমূত্রের সঙ্গে থাকে। যেমন ধরুন যারা সরাসরি মলমূত্র নিয়ে কাজ করেন, তাদের কাছেও প্রতিনিয়ত অনেক টাকা বা কয়েন হাতবদল হয়। আবার বাজারে টাকা মাটিতে পড়ে। মূলত এভাবে মলমূত্রের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া চলে আসে নোট বা কয়েনে। এছাড়াও অনেকের ওয়াশরুম থেকে আসার পর ঠিকমতো হাত ধোঁয়ার অভ্যাস নেই। তারাই আবার টাকা ধরছেন এবং সেই টাকা তাদের কাছ থেকে অন্যদের কাছে যাচ্ছে। এভাবেও ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ছড়াচ্ছে। তাই ঝুঁকিমুক্ত থাকতে চাইলে সচেতনতার বিকল্প নেই।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. শামীমা নাসরিন শাহেদ বলেন, ‘এসব ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার কারণে ডায়রিয়াসহ পরিপাকতন্ত্রে নানা ধরনের রোগবালাই হবার আশঙ্কা রয়েছে।’

অধ্যাপক আব্দুল্লাহ হারুণ চৌধুরী জানান, ‘মাংসের দোকানে সর্বোচ্চ ২৬৭০, মাছ বিক্রেতার কাছে থাকা টাকায় ২৬০০ ও মুরগি বিক্রেতার টাকায় ২৩০০ ই-কোলাই ব্যাকটেরিয়া এবং এর চেয়েও বেশিমাত্রায় ফেকাল কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গেছে। ভিক্ষুকের কাছ থেকে সংগ্রহ করা কয়েনেও ১ হাজার মাত্রার চেয়ে বেশি কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গেছে।’-বিবিসি