ঢাকা, ১১ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার, ২০২৫ || ২৮ মাঘ ১৪৩১
good-food
১৫

সালমান-আনিসুল-পলকসহ ৮ জনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৭:১৮ ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫  

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক রাষ্ট্রদূত শমসের মবিন চৌধুরী, পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, যাত্রাবাড়ি থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান, সাবেক সহকারী পুলিশ কমিশনার তানজিল আহমদ এবং এসআই শাহাদাত হোসেনকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।

 

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ি থানার মো. পারবেজ মিয়া হত্যা মামলায় সালমান, আনিসুল, পলক ও শমসের মবিনের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রাজধানীর যাত্রাবাড়ি থানার সামনে পথচারী মো. মাসুদুর রহমান জনি হত্যা মামলায় মামুনের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এছাড়া পুলিশ কর্মকর্তার ছেলে ইমাম হাসান তাইম হত্যা মামলায় আবুল হাসান, তানজিল আহমদ ও শাহাদাত হোসেনের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

 

সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) আসামিদের কারাগার থেকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা তাদের ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। আসামি পক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জি এম ফারহান ইশতিয়াক তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

 

এক মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে রাজধানীর যাত্রাবাড়ি এলাকায় অংশ নেন পারবেজ মিয়া। ওই দিন বিকালে আসামিদের ছোড়া গুলিতে আহত হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) পাঠানো হয়। সেখানে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় গত ২৯ অক্টোবর মামলাটি করেন নিহতের মা কানীছ ফাতেমা।

 

আরেক মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত ৫ আগস্ট দুপুরে মো. মাসুদুর রহমান জনি (৪০) কর্মস্থল থেকে নিজ বাড়ি ডেমরায় ফেরার পথে রাজধানীর যাত্রাবাড়ি থানাধীন চৌরাস্তা থানার সামনে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীদের গুলিতে আহত হন। পরে তাকে রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালে নেয়া হয়। কয়েকদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গত ১২ আগস্ট ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় গত ২৯ আগস্ট যাত্রাবাড়ি থানায় হত্যা মামলাটি করা হয়।

 

অপর মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে সরকার গত ২০ জুলাই কারফিউ জারি করে। ওই দিন দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল ছিল। ওই সময় তাইম দুই বন্ধুর সঙ্গে যাত্রাবাড়ির কাজলা এলাকায় চা খেতে যাই। সেসময় কিছু বৈষম্য কোটা আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ করছিল। তখন ইকবাল হোসেন, শামীম ও তানজিল আহমেদের নির্দেশে জাকির হোসেন ও তার সঙ্গীরা বিক্ষোভকারীদের ওপর টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড, রাবার বুলেট ও গুলি চালায়।

 

প্রাণ ভয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা এলোপাতাড়ি ছুটাছুটি করতে থাকে। তাইম ও তার দুই বন্ধু লিটন চা স্টোরের ভেতর ঢুকে দোকানের সাটার টেনে দেয়। কিন্তু সাটারের নিচের দিকে আধা হাত খোলা ছিল। সেখানে অবস্থারকারীদের পুলিশ টেনে বের করে। জাকির হোসেন গুলি থেকে বাঁচতে চাইলে দৌড় দিতে বলে। তখন তাইম সবার আগে দৌড় দেয়। জাকির গুলি করে। বিনা চিকিৎসায় তাইম সেখানেই মারা যায়।

 

গত ১৩ আগস্ট গোপন তথ্যের ভিত্তিতে নৌপথে পলায়নরত অবস্থায় রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে সালমান এফ রহমান ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়। গত ১৪ আগস্ট রাতে রাজধানীর খিলক্ষেত থানাধীন নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকা থেকে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় জুনায়েদ আহমেদ পলককে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। ১৭ অক্টোবর  রাজধানীর বনানী ডিওএইচএস’র বাসা থেকে শমসের মবিন চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করে তারা। ৩ সেপ্টেম্বর পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ১৬ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারের টেকনাফ থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

অপরাধ বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর