ঢাকা, ৩১ মার্চ সোমবার, ২০২৫ || ১৭ চৈত্র ১৪৩১
good-food
৩৩

হার্ট অ্যাটাক নিয়ে ৭ মিথ

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ০৩:১২ ২৬ মার্চ ২০২৫  

হার্ট অ্যাটাক শুনলেই ভয়ে মুখ শুকিয়ে যায়। কারণ, এই আধুনিক সময়ে এটি মৃত্যুর একটি বড় কারণ হয়ে উঠছে। একটা সময় ছিল যখন বয়স্কদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের ঘটনা দেখা যেত। কিন্তু আজকাল ফিট তরুণরাও এর শিকার হচ্ছেন। হৃদরোগ সম্পর্কিত রোগ লক্ষ লক্ষ মানুষকে গ্রাস করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে হৃদরোগে আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটাই বেড়েছে। 

 

এমনকি সম্পূর্ণ সুস্থ এবং ফিটনেস ফ্রিক যারা দেখতে পুরোপুরি সুস্থ ছিলেন, তারাও এতে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। আজকাল, খারাপ জীবনধারা এবং অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস হৃদরোগের প্রধান কারণ হয়ে উঠছে। এই যুগেও মানুষের হার্ট অ্যাটাক এবং অন্যান্য হৃদরোগ সম্পর্কে সচেতনতার অভাব রয়েছে। এই সম্পর্কিত অনেক মিথ এখনও মানুষের হৃদয়ে ভয় তৈরি করে। তাহলে আজকের প্রবন্ধে হার্ট অ্যাটাক সম্পর্কিত মিথ এবং সত্যগুলো জেনে নেওয়া যাক---

 

মিথ ১: হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের কম কাজ করা উচিত
সত্য:
অনেকেই বিশ্বাস করেন যে হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তির বিশ্রাম নেওয়া উচিত অথবা কঠোর পরিশ্রম করা উচিত নয়। কিন্তু সত্য হলো হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা মোটেও ভালো নয়। কারণ শারীরিক পরিশ্রমের ফলে হৃদপিণ্ডের পেশী শক্তিশালী হয় এবং একই সাথে পুরো শরীরে রক্ত সঞ্চালন ভালো থাকে। যা হৃদরোগীদের জন্য উপকারী। তবে হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের তীব্র ব্যায়াম এড়িয়ে চলা উচিত। শুধু ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যায়াম করা উচিত। 

 

মিথ ২: বেশি ব্যায়াম করলে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে না 
সত্য:
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিটি শরীরের নিজস্ব ক্ষমতা রয়েছে। যদি আপনি দীর্ঘ সময় ধরে ব্যায়াম করেন। তবে এটি শরীরের পেশী এবং অঙ্গগুলির ক্ষতি করতে পারে। তাই দীর্ঘ সময় ধরে ব্যায়াম করা এবং তীব্রতার এক্সারসাইজ করা স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। এটি হৃদয়ের উপরও খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। 


 

মিথ ৩: তরুণদের হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি নেই
সত্য:
সাধারণত তরুণদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাক কম দেখা যায়। বেশিরভাগ বয়স্ক ব্যক্তিরা হার্ট অ্যাটাকে ভোগেন। কিন্তু তবুও এটা সম্পূর্ণ ভুল যে তরুণদের হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি নেই। হার্ট অ্যাটাকের বয়সের সাথে কোনও সম্পর্ক নেই। কারণ পারিবারিক ইতিহাস, মানসিক চাপ, শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা, খারাপ জীবনধারা, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, ডায়াবেটিস, রক্তচাপ এবং স্থূলতার মতো কারণে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। 

 

মিথ ৪: বুকে ব্যথা হার্ট অ্যাটাকের একটি লক্ষণ 
সত্য:
বুকে ব্যথার অনেক কারণ থাকতে পারে। তাই বুকে ব্যথা হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ হওয়া জরুরি নয়। যদিও বুকে ব্যথা হার্ট অ্যাটাকের সংকেতও হতে পারে। যদি হৃদযন্ত্রের ধমনীতে কোনও বাধা থাকে। তবে বুকে ব্যথা হতে পারে। যা হার্ট অ্যাটাকের কারণে হয়। কাঁধে ব্যথা, চোয়ালে ব্যথা, গলা ব্যথা, ঘাম, শ্বাসকষ্ট, বমি বমি ভাব, মাথা ঘোরা বা ক্লান্তির মতো উপসর্গগুলিও হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ হতে পারে। এর মানে হল বুকে ব্যথা হৃদরোগের একমাত্র লক্ষণ নয় বরং এটি শরীরের অন্যান্য অংশেও ব্যথার কারণ হতে পারে। 

 

মিথ ৫: হার্ট অ্যাটাক শুধু উচ্চ রক্তচাপের কারণে হয় 
সত্য:
উচ্চ রক্তচাপ একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলেও হৃদরোগের অন্যান্য কারণও রয়েছে। যেমন- উচ্চ কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিস, ধূমপান, স্থূলতা, শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা এবং মানসিক চাপ ইত্যাদি। 

 

মিথ ৬: যদি আপনার বুকের ডান দিকে ব্যথা হয়, তাহলে তা হার্ট অ্যাটাক নয় 
সত্য:
সাধারণত বিশ্বাস করা হয় যে বুকের বাম দিকে ব্যথা হার্ট অ্যাটাকের সাথে সম্পর্কিত। কিন্তু সত্য হল হার্ট অ্যাটাকে, বুকের ডান, বাম বা উভয় পাশে ব্যথা বা টানটান ভাব হতে পারে। এতে কেবল বুকেই নয়, হাত, চোয়াল, ঘাড় এবং কাঁধেও ব্যথা হতে পারে। 

 

মিথ ৭: হার্ট অ্যাটাক শুধু রাতে হয়
সত্য:
হার্ট অ্যাটাক যে কোনও সময় হতে পারে। তবে কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে বিকেলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেশি হতে পারে। 

 

মিথ ৮: যারা সুস্থ তাদের হৃদরোগের ঝুঁকি থাকে না 
সত্য:
শারীরিকভাবে সুস্থ থাকা মানেই যে আপনার হার্ট অ্যাটাক হবে না, তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। শারীরিকভাবে সুস্থ থাকলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। কারণ শারীরিক ব্যায়াম শরীরের পেশী শক্তিশালী করে, রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে এবং শরীরে কোলেস্টেরল তৈরি হতে বাধা দেয়। পারিবারিক ইতিহাস, ডায়াবেটিস, রক্তচাপ, কোলেস্টেরল ইত্যাদি অনেক কারণেই হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। তাই শারীরিকভাবে সুস্থ ব্যক্তির হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কম থাকে। তবে তার হার্ট অ্যাটাক হবে না এমন কোনও নিশ্চয়তা নেই।