ঢাকা, ২৫ নভেম্বর সোমবার, ২০২৪ || ১১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৩৮৭

১০ হাজার ছাড়ালো কোভিড-১৯ আক্রান্ত: ১৮২ জনের মৃত্যু

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৫:৫৪ ৪ মে ২০২০  

কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছেই। দেশে গেল ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমিত ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছেন ৬৮৮ জন। এটি এ পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্ত। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত করোনায় মোট শনাক্ত হলেন ১০ হাজার ১৪৩ জন।

 

গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে আরও ৫ জনের। এ নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৮২ জনে।

 

এছাড়া ২৪ ঘণ্টায় ১৪৭ জন সুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে এ পর্যন্ত সারা দেশে মোট সুস্থ হয়েছেন ১২শ' ৯ জন।

 

সোমবার (৪ মে) দেশের কোভিড-১৯ সম্পর্কিত সার্বিক পরিস্থিতি জানাতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত স্বাস্থ্য বুলেটিন অনলাইনে প্রচারিত হয়। বুলেটিনে ভিডিও কনফারেন্সে এসব তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা।

 

তিনি জানান, মৃত্যুবরণকারী ৫ জনের সবাই পুরুষ। বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে ৩ জন, ৫০ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে একজন এবং ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে একজন। ৫ জনের মধ্যে ৩ জন ঢাকার, একজন সিলেটের এবং একজন ময়মনসিংহের।

 

স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় যে ১৪৭ জন সুস্থ হয়েছেন। এর মধ্যে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল থেকে ১৩ জন, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল থেকে ১১ জন, ঢাকা মহানগর হাসপাতাল থেকে ৭ জন, রাজারবাগ পুলিশ লাইন হাসপাতাল থেকে ১৩ জন, লালকুঠি হাসপাতাল থেকে ৪ জন, মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে ১৪ জন; ঢাকা বিভাগে ১১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৭ জন, রাজশাহী বিভাগে ৩ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ১৭ জন, রংপুর বিভাগে ৪ জন এবং সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল থেকে ১৪ জন সুস্থ হয়েছেন। 

 

নাসিমা সুলতানা জানান, ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ ছিল ৬ হাজার ৩১৫টি, আর পরীক্ষা করা হয়েছে ৬ হাজার ২৬০টি। এই নমুনা সংগ্রহ আগের দিনের চেয়ে ২১ দশমিক ১১ শতাংশ বেশি এবং নমুনা পরীক্ষা গতদিনের চেয়ে ১৬ দশমিক ৬১ শতাংশ বেশি। এখন পর্যন্ত মোট নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ৮৭ হাজার ৬৯৪টি। 

 

স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, নতুন করে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৯০ জনকে। এখন পর্যন্ত মোট আইসোলেশনে আছেন এক হাজার ৬৩৬ জন। আইসোলেশন থেকে ছাড়া পেয়েছেন আরও ৯১ জন। এখন পর্যন্ত ছাড়া পেয়েছেন মোট এক হাজার ১৭৩ জন।

 

প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টিন মিলে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ২ হাজার ৭৪২ জনকে। এখন পর্যন্ত এক লাখ ৯৫ হাজার ৩৩৪ জনকে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে।

 

কোয়ারেন্টিন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড়া পেয়েছেন ২৮ হাজার ৫৪৮ জন। এখন পর্যন্ত মোট ছাড়া পেয়েছেন এক লাখ ৫৩ হাজার ৪০১ জন। বর্তমানে মোট কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪১ হাজার ৯৩৩ জন।

 

তিনি জানান, ৩ মের রিপোর্ট অনুযায়ী শনাক্তদের মধ্যে ৬৮ ভাগ পুরুষ এবং ৩২ ভাগ নারী। মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ৭৩ ভাগ পুরুষ এবং ২৭ ভাগ নারী। বয়স অনুযায়ী বিভাজন করলে ৪২ শতাংশ মৃত্যু ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে, ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সের ২৭ শতাংশ, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ১৯ শতাংশ, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ৭ শতাংশ, ২১ থেকে ৩০ বছরের ৩ শতাংশ এবং ১০ বছরের নিচে ২ শতাংশ।

 

নাসিমা সুলতানা বলেন, ‌'ঢাকা শহর এবং ঢাকা বিভাগেই সর্বোচ্চ শনাক্ত হয়েছে এখন পর্যন্ত। এরপর চট্টগ্রাম এবং ময়মনসিংহ। ঢাকা শহরের পর সর্বাধিক পাওয়া গেছে ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জে, চট্টগ্রাম বিভাগের কুমিল্লা, সিলেটের হবিগঞ্জ, রংপুর বিভাগের রংপুর জেলা, খুলনা বিভাগের যশোর জেলা, ময়মনসিংহ বিভাগের ময়মনসিংহ জেলা, বরিশাল জেলা ও রাজশাহীর জয়পুরহাট জেলায় সর্বাধিক সংখ্যক আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছেন।'

 

করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে ঘরে থাকার এবং স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয় বুলেটিনে।

 

করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয় গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে। তবে ছড়িয়ে পড়া এ ভাইরাস ক্রমে গোটা বিশ্বকে বিপর্যস্ত করে দিয়েছে। চীন পরিস্থিতি অনেকটাই সামাল দিয়ে উঠলেও এখন মারাত্মকভাবে ভুগছে ইউরোপ-আমেরিকা-এশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চল। এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৫ লাখ ৩৮ হাজারের বেশি। মৃতের সংখ্যা প্রায় আড়াই লাখ। তবে সাড়ে ১১ লাখ রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন।

 

গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর প্রথম দিকে কয়েকজন করে নতুন আক্রান্ত রোগীর খবর মিললেও এখন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এ সংখ্যা। বাড়ছে মৃত্যুও।

 

প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। নিয়েছে আরও নানা পদক্ষেপ। যদিও ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-গাজীপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় খুলেছে পোশাক কারখানা। তবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা নিশ্চিত করা না গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকবে কি-না, তা নিয়ে সন্দিহান বিশেষজ্ঞরা।