ঢাকা, ২৬ নভেম্বর মঙ্গলবার, ২০২৪ || ১১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৭৪৬

২৬ জনের হাতে বিশ্বের ৩৮০ কোটি গরিবের সমান সম্পদ

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৬:১২ ২১ জানুয়ারি ২০১৯  

ছবি সংগৃহীত

ছবি সংগৃহীত

মাত্র ২৬ জনের হাতে পৃথিবীর অর্ধেক গরিব মানুষের সম্পদের সমপরিমাণ সম্পদ রয়েছে  বলে জানিয়েছে  দাতব্য সংস্থা অক্সফাম।

অক্সফাম জানিয়েছে, এই ২৬ জন ধনীর সম্পদের পরিমাণ ১ লাখ ৪০ হাজার কোটি ডলার, যা ৩৮০ কোটি মানুষের সম্পদের সমপরিমান।

আজ সোমবার সুইজারল্যান্ডের দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের সম্মেলনকে সামনে রেখে অক্সফামের এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।

জানা গেছে দাতব্য সংস্থা অক্সফামের এই বার্ষিক সম্মেলনে বিশ্বের প্রভাবশালী রাষ্ট্রনেতাদের পাশাপাশি ধনকুবেরদের অনেকাংশ থাকবেন।

অক্সফামের এই প্রতিবেদনের পরিপেক্ষিতে এএফপির জানায়, পৃথিবীর ধনী ও দরিদ্রের এই বৈষম্য দূর করতে সরকারের পাশাপাশি  ধনকুবেরদেরও এগিয়ে আসার অনুরোধ করেছে অক্সফাম।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ধনীদের সম্পদ যে স্থির অবস্থায় আছে—তা কিন্তু নয়। তাঁদের সম্পদ গত ২০১৮-২০১৯ বছরে প্রতিদিন প্রায় ২৫০ কোটি ডলার করে বেড়েছে। উদাহরণ হিসেবে টানা হয়েছে ফোর্বসের তালিকায় শীর্ষে থাকা ধনী অ্যামাজনের সিইও জেফ বেজোসকে। অ্যামাজনের সিইও জেফ বলা হয়েছে, তার সম্পদ গত বছর ১১ হাজার ২০০ কোটি ডলার বেড়েছে। সেই সম্পদের মাত্র ১ শতাংশ ১০ কোটি ৫০ লাখ জনসংখ্যার দেশ ইথিওপিয়ার পুরো স্বাস্থ্য বাজেটের সমান।

অন্যদিকে ধনীর সম্পদ বাড়লেও সম্পদ কমেছে দরিদ্রের । গরিব ৩৮০ কোটি মানুষের সম্পদ গত বছর ১১ শতাংশ কমেছে। ধনী ও দরিদ্রের সম্পদের এই বৈষম্যের কারনে অর্থনৈতিক ক্ষতির পাশাপাশি জন–অসন্তোষকেও হয়েছে অনেক। ভবিষ্যতে আরো হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি করেছে অক্সফাম।

এদিকে ধনী ও দরিদ্রের সম্পদের বৈষম্যের কারনে সৃষ্ট হচ্ছে নানা আন্দোলন। ক্ষোভে আস্তে আস্তে রাস্তায় নামছে সাধারণ মানুষ। উদাহরন হিসেবে অক্সফাম প্রতিবেদনে বলেছে ফ্রান্সের কথা। ফ্রান্সে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে আন্দোলনের শুরু হয় এবং তা শেষ পর্যন্ত সামাজিক জীবনের নানা অসংগতির প্রতিবাদ হয়ে উঠেছে। এই ক্ষোভের বড় একটি কারণ, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ ধনীদের কর শিথিলের একটি সুযোগ করে দিয়েছেন। গরিব মানুষ জীবনধারণ করতে হিমশিম খাচ্ছে আর ধনীদের আরও ধন বাড়ানোর সুযোগ করে দিচ্ছে সরকার—এটা মেনে না নিয়ে রাস্তায় এসে বিক্ষোভে শামিল হয়েছেন হাজারো বিক্ষোভকারী।

অক্সফামের নির্বাহী পরিচালক উইনি বিয়ানিমা নিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, বিশ্বব্যাপী মানুষ এখন ক্ষুব্ধ ও হতাশ। এর অন্যতম কারণ যে সম্পদের বৈষম্য, তা তাদের প্রতিবেদনেই উঠে এসেছে।

অক্সফামের প্রতিদেনটি ১০৬ পৃষ্ঠার। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে,  বিশ্বব্যাপী শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বৈষম্য প্রকট হচ্ছে। চিকিৎসার ব্যয় বহন করতে না পেরে দিনে ১০ হাজার মানুষ মরছে।

 

এসব কারণকে সামনে রেখে ধনীদের কাছে অক্সফামের অনুরোধ হচ্ছে, ধণীরা তাদের সম্পদের অতিরিক্ত শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ কর প্রদান করুন। সেই অর্থ দিয়ে পড়াশোনার সুযোগবঞ্চিত ২৬ কোটি ২০ লাখ শিশুর কাছে শিক্ষার আলো পৌঁছে দেওয়া যাবে। আর স্বাস্থ্যসেবাবঞ্চিত ৩৩ লাখ মানুষকে যথাযথ স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া যাবে।